আসসালামুওালাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আসা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও ভালো
আছি এবং আপনাদের দোয়ায় আমার Networking Solution Service এর কাজ খুব ভালোই
চলছে। আজ অনেক দিন পরে আবারো আপনাদের মাঝে একটি টিউন করার জন্য হাজির
হলাম। এবার আসি কাজের কথায়......
উন্নত বিশ্বে ইন্টারনেটের গতি রকেটের মত। আর আমাদের দেশে ইন্টারনেটের গতি
কিলোবাইটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ধীর গতির ইন্টারনেটের কারণে অনেকের কার্যক্রম
থমকে আছে। অনেক তরুণ প্রতিভাবান ফ্রিল্যান্সার তো একটু বেশি ইন্টারনেট
স্পিডের জন্য প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা খরচ করে শহর মুখী হচ্ছে। মাত্র
কয়েকদিন আগেই মোবাইল অপারেটররা ৩জি সেবা দেওয়ার লাইসেন্স পেয়েছে। কিন্তু
তাদের
কার্যক্রম এখনও জেলা শহরের মধ্যেই
সীমাবদ্ধ। এ ছাড়া রক্ত চোষা মোবাইল কোম্পানির ইন্টারনেটের দাম এত বেশি যে
সাধারণ মানুষের পক্ষে তাদের নেট প্যাকেজ ব্যবহার করা কঠিন। ওয়াইম্যাক্স
সেবা দাতাদের অবস্থাও একই। কোন আনলিমিটেড প্যাকেজ তো নেই ই। কম টাকায় উচ্চ
গতির নেট পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। আনলিমিটেড প্যাকেজ,
স্বল্প মূল্যের কারণে অধিকাংশ মানুষই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে
চান। কিন্তু দেশের খুব কম জায়গাতেই আছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। ব্রডব্যান্ড
ইন্টারনেটের ব্যবসা কম ঝুঁকিপূর্ণ।
আমি সাধারনতো Broadband Business চালু করতে যে সকল Technical Support দরকার তা দিয়ে থাকি। তো
বিষয়টা নিয়ে অনেকেই আমার সাথে আলোচনা করেছে আসা করি আমি তাদের সকলকেই
সঠিক তথ্য দিতে পেরেছি আর যদি না দিতে পারি তাহলে আমাকে ক্ষমা করবেন কারন
আমি আপনাদের কোন উপকারে আসতে পারিনি। আজ তার পরেও আমি আবার বিষয়গুলো নিয়ে
বিস্তারিত আলোচনা করছি।
এখন আমি আপনাদের সাথে Networking / Internet
এর business আপনি আপনার এরিয়াতে কীভাবে করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলচনা
করবো।আপনি যদি আপনার এরিয়াতে Networking / Internet এর business করতে চান
তাহলে আপনাকে প্রথমেই যা করতে হবে তা নিচে ধাপে ধাপে আমি বর্ণনা করছি।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা করতে হলে
প্রথমে রিসার্চ করে নিন আপনার ব্যবসায়ের এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী
কেমন। যদি সন্তোষজনক মনে হয় তাহলে শুরু করতে পারেন। ব্রডব্যান্ড ব্যবসা
করার জন্য বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স করতে হবে। লাইসেন্স করার জন্য নির্ধারিত
ফরমে আবেদন করতে হবে। ফরম পাবেন
। ফরমে বর্ণিত সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে বিটিআরসি হেড অফিসে নিয়ে জমা দিতে
হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আবেদন করার ৩ মাসে ভিতর লাইসেন্স পেয়ে যাবেন। এছাড়া
লাইসেন্স এর জন্য আমাদের সাহায্য নিতে পারেন।
লাইসেন্স পাওয়ার পর কিনতে হবে ব্যান্ডউইথ।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসার জন্য
সবার আগে প্রয়োজন ব্যান্ডউইথ। আর ব্যান্ডউইথ আসে অপটিক্যাল ফাইবারের
মাধ্যমে। তাই প্রথমে দেখতে হবে যে আপনার ব্যবসায়ীক এরিয়াতে কোন
(Internet
Service Providers Company) এর অপটিক্যাল ফাইবার
আছে কিনা। শুধু ফাইবার থাকলেই হবে না কানেকশন দেওয়ার পপস পোর্টও থাকতে
হবে। বিটিসিএলের ফাইবার লাইনের পপস পোর্ট আছে শুধু জেলা শহরগুলিতে। তাতে
হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মোবাইল অপারেটরদের ৩জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কারণে
এখন গ্রাম পর্যায়েও অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে গেছে। বেসরকারি IIG
(International Internet Gateway) গুলা প্রায় সারাদেশে তাদের নেটওয়ার্ক
বিস্তৃত করেছে। আপনাকে ঐসব IIG এর কাছ থেকে জেনে নিতে হবে আপনার এলাকায়
তাদের অপটিক্যাল ফাইবারের পপস পোর্ট আছে কিনা।
কম দামে ব্যান্ডউইথ
বিক্রি করে ও সারাদেশে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে এমন কয়েকটি IIG হল BTCL, BTS Communication, Bijoy Online, Fiber @ Home। দেশে মোট ৩৬টি
ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডার রয়েছে। সবগুলি ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডার সম্পর্কে
জানতে ক্লিক করুন
যদি
আপনার কাছাকাছি পোর্ট থাকে তাইলে ব্যবসা শুরু করতে আর বাধা নেই। কাছাকাছি
না হয়ে একটু দূরে পোর্ট থাকলে ঐখান থেকেও রেডিও লিংক করে আনতে পারবেন। আর
যদি পপস পোর্টের দূরত্ব বেশি হয় তাইলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ
নিতে পারবেন বা মাইক্রোওয়েভ দ্বারা কানেক্টেড মোবাইল টাওয়ারের বিটিএস থেকে
নিতে পারবেন ব্যান্ডউইথ। তবে এই দুই পদ্ধতিতেই ব্যান্ডউইথের দাম অনেক বেশি
পরবে। বিভাগীয় শহরগুলিতে অনেক আইএসপি কম দামে সাবলাইন দিয়ে থাকে। তাদের
থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়েও ব্যবসা করতে পারেন।
২। আপনার নাম মোবাইল নাম্বার সহ আপনি কত MB Bandwidth নিতে
চান তা উল্লেখ করে আপনার সম্পূর্ণ ঠিকানা (রোড নং, গ্রাম, ডাক ঘর টিউন
কোড, থানা, জেলা) সহ আমাদের ইমেইল করুন info@trstnetwork.com
২.
'ব্যান্ডউইথ' একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওয়েবসাইট বা ইন্টারনেট তথ্য
সেবা থেকে আপনার কম্পিউটার স্থানান্তরিত করা যেতে পারে এবং যা এর হার
বর্ণনা করে। যখন আপনি কোন ওয়েব পেজ খোলেন, ফাইল ডাউনলোড করেন, তখন
ব্যান্ডউইথ আপনার ইন্টারনেট কার্যকলাপ দক্ষতা এবং গতি পরিমাণ নির্ধারণ
করে। সাধারণত ব্যান্ডউইথ কখনও কখনও 'প্রতি সেকেন্ডে বিট' বা 'প্রতি
সেকেন্ডে বাইট' হিসাবে পরিমাপ করা হয়।
৩. সহজ কথায় বলতে গেলে আমাদের
ভাত খাবার জন্য যেমন চাউল এর প্রয়োজন তেমনি ইন্টারনেট, ব্রাউজিং, ডাউনলোড
করার জন্য ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন।
MikroTik
১. MikroTik Router Board:
MikriTik টা সাধারনত আপনার Bandwidth Manage এবং ইউজারদের Bandwidth
Distribute করার জন্য ব্যবহার হয়। আপনি কোন ইউজার কে কত MB Bandwidth
দিবেন, কত MB Speed Limit দিবেন, কত MB Data Limit দিবেন তার সব কিছুই
আপনারা এই MikriTik এর মাধ্যমে Manage করতে পারবেন। সম্পূর্ণ আপনার User
Management বলতে যা কিছু বোঝায় তার সবকিছুই আপনি MikriTik দিয়ে করতে
পারবেন। বাজারে আপনারা বিভিন্ন দামের এবং মডেলের MikriTik পাবেন। MikriTik
এর বাজার মূল্য ৫০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০০০ টাকা পর্যন্ত এবং এর চাইতেও
বেশি দামের MikriTik আপনারা বাজারে পাবেন।
Fiber Optic Cable
২. Fiber Optic Cable:
এই Cable ব্যবহার হয় সাধারনত মেইন লাইন টানার জন্য। ISP Company থেকে মেইন
লাইন টানার জন্য এবং আপনাদের MikroTik এর LAN port থেকে Local Area
Networking এর জন্য এই Cable ব্যবহার হয়। এই Cable এর এক একটা core দিয়ে এক
একটা নেটওয়ার্ক বিন্যাস করা যায়। এই ক্যাবলে তামার তারের চেয়ে কাচকে
মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক
ইন্টারফের্যান্স নেই। এই ক্যাবলের ডাটা ট্রান্সমিসন স্পীড অনেক বেশী।
ফাইবার অপটিক ক্যাবল দুই ধরনের হয়ে থাকে। সিঙ্গল মোড ফাইবার এন্ড
মাল্টিমোড ফাইবার। বর্তমানে বাজারে 4 core এর Fiber Optic Cable এর মূল্য
প্রতি মিটার ১৪ টাকা। এছাড়াও আপনারা বাজারে আরও অনেক বেশি core এর Fiber
Optic Cable পাবেন...।।
Twisted Pair Cable/ UTP Cable
৩.Twisted Pair Cable/ UTP Cable: এই
Cable সাধারনত সুইজ থেকে ইউজারদের কম্পিউটার পর্যন্ত ইন্টারনেট কানেকশন
দেওয়ার জন্য ব্যবহার হয়। ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল দুই দরনের হয়ে থাকে। ১.
শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল, ২.আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল।
· শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
শিল্ডেড
ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে প্রতিটি ট্যুইস্ট জোড়া থাকে একটি করে শক্ত
আচ্ছাদনের ভেতর। ফলে ইলেকট্রিক ইন্টারফের্যান্স অনেক কম থাকে। এই ক্যাবলের
ডাটা ট্রান্সফার স্পীড ৫০০ এমবিপিএস হয়ে থাকে।
· আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
আনশিল্ডেড
ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে পেয়ারের বাইরে অতিরিক্ত কোন শিল্ডিং থাকে না
কেবল বাহিরে একটি প্লাষ্টিকের জেকেট থাকে। এই ক্যাবলের ডাটা ট্রান্সফার রেট
১৬ এমবিপিএস।
Switch
৪. Switch:
Switch ব্যবহার করা হয় Local Area Network এর মধ্যে ছোট ছোট পপ করার
জন্নে। Twisted Pair Cable/ UTP Cable বা Fiber Optic Cable বেশ কিছুদুর
টানার পরে একটা নির্দিষ্ট এরিয়াতে বেশ কিছু ইউজার কে একটা UTP Cable অথবা
Fiber Optic Cable এর একটা চরে থেকে কানেকশন দিতে এই Device ব্যবহার করা
হয়। সুইজ হলো একাধিক পোর্ট বিশিষ্ট ব্রিজ।ইহা প্রতিটি নোডের ম্যাক এড্রেস
এর তালিকা সংরক্ষন করে। ইহা ওএসআই মডেল এর ডাটালিংক লেয়ারে কাজ করে।
Media Converter
৫. Media Converter:
Fiber Optic Cable এর একটি Core কে Splice Machine এর দ্বারা Patch Cord
এর দ্বারা এই Device এর সাথে Connect করে Ethernet Port এ Convert করার
জন্য Media Converter ব্যবহার করা হয়। এই Device use করলে Ethernet Speed
বেড়ে যায়।
৬.
Patch Cord:
Fiber Optic Cable এর একটি Core কে Splice Machine এর দ্বারা Patch Cord
এর সাথে Joint দিয়ে ব্যবহার করা হয় Media Converter এর সাথে Connect করার
জন্য।
৭. Splice Machine: Fiber Optic Cable এর Core Joint এর কাজে Splice Machine ব্যবহার হয়।
Router
৮.
Router:
Router use করা হয় Mobile Device গুলতে WiFi use করার জন্য। ইউজারা
সাধারনত তাদের ঘরে Mobile, Laptop অথবা অন্য কোন WiFi Enable Device এ
Internet use করার জন্য Router ব্যবহার করে থাকে।
Radio Device
৯. Radio Device:
এই Device গুল ব্যবহার করা হয় Long Rang WiFi Zone করার জন্য। এই Device
গুল দুই ধরনের হয় একটা 2.4GHZ এবং 5GHZ এর হয়ে থাকে। 2.4GHZ এর Device দিয়ে
আমরা Long Rang WiFi Zone করতে পারি কারন আমাদের দেশের WiFi Enable Device
গুল 2.4GHZ এর বেশি Support করতে পারে না। আপনারা যারা Long Rang WiFi
Zone করতে চান তারা এই Device এর মাধ্যমে Maximum 1KM এরিয়া WiFi Zone করতে
পারবেন। এছাড়াও আপনারা এই Device গুলর মাধ্যমে 50+KM Distance এ Bandwidth
Through করতে পারবেন। Long Distance এ Bandwidth Through/Received করার
জন্য 5GHZ এর Device ব্যবহার করা সবচাইতে বেশি ভালো।
এখানে
আপনারা যারা আপনাদের এরিয়াতে ব্রডব্যান্ড ব্যবসা Cable কানেকশন দিয়ে করতে
চান তাহলে (Mikrotik Routerboard, Media Converter, Fiber Optic Cable, Twisted Pair Cable (UTP Cable or STP Cable), Switch, Router, Computer) এই Device গুল ব্যবহার করবেন এবং
আপনি যদি আপনার এরিয়াতে ব্রডব্যান্ড ব্যবসা WIFI Connection দিয়ে করতে চান
তাহলে আপনার (Mikrotik Routerboard, Computer, Router, Radio Device m2) এই
Device গুল ব্যবহার করবেন।
সার্ভার সেটাপঃ
Bandwidth Connection চলে আসলো Device
কেনা হয়ে গেল এবং Device সম্পর্কে কিছু ধারনাও হয়ে গেল। এখন আপনি ব্যবসা
করবেন কীভাবে বা আপনার এরিয়ার Clint দের Internet Connection কীভাবে দিবেন,
কীভাবে তাদের ১টি নির্দিষ্ট Speed Limit দিবেন, কিভাবে MikroTik Configure
করবেন? এই সকল বিষয়ে আপনার যদি তেমন কোন ধারনা না থাকে তাহলে এটা নিয়ে আপনার চিন্তা করার কোন কারন নেই এজন্য আমরা আপনাকে
সাহায্য করবো। আমরা আপনার Server এবং Networking এর সব কিছু আমাদের নির্দিষ্ট Service Charge নিয়ে Setup করে আপনাকে শিখিয়ে
দিবো যে কীভাবে আপনাকে Networking করতে হবে এবং কীভাবে আপনি আপনার Clint
দের Service দিতে পারবেন।
পুঁজি লাগবে কত:
পুঁজি কত লাগবে সেটা নির্ভর করবে আপনি কত
কিলোমিটার এলাকায় লাইন টানবেন তার উপর। রাউটার ৩৬,০০০, মিডিয়া কনভার্টার
৪৫০০, পিসি ২৫,০০০ (আগে থাকলে লাগবে না), সুইচ বক্স ও কানেকশন পোর্ট প্রতি
কিলোমিটার লাইনে ১০,০০০, ক্যাবল প্রতি কিলোমিটার ১২,০০০, লাইসেন্স ফি ১০০০
টাকা কানেকশন ফি ১০,০০০-২০,০০০, ব্যান্ডউইথ প্রতি মেগাবিট ১২০০-৩০০০ টাকা।
প্রাথমিকভাবে ৫ এমবি ব্যান্ডউইথ আর ২ কিলোমিটার লাইন টেনে ২৫০,০০০-৩০০,০০০
টাকা হলেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
ঝুঁকি কতটুকু:
সব ধরনের ব্যবসায় কোম বেশি ঝুঁকি থাকেই কিন্তু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় ঝুঁকি অনেক কম।
কারণ এই ব্যবসায় একবার সব কিছু স্থাপন করে নিলে তারপর ব্যান্ডউইথ ছাড়া তেমন
খরচ নেই। বর্ষাকালটা ব্রডব্যান্ড ব্যবসার জন্য শত্রু। বজ্রপাতে যন্ত্রপাতি
পুড়ে যায়।
ব্যান্ডউইথ কিনব ৩০০০ করে বিক্রি করব ১২০০ করে তাইলে আমার লাভ কই:
ধরুন
১ এমবিপিএস ডেডিকেটেড ব্যান্ডউইথ নিলেন ৩০০০ টাকা দিয়ে।
ইউজার বেশি হলে এই
১ এমবি থেকে ৬ জনকে ১ এমবিপিএস করে দিতে পারবেন। কারণ হচ্ছে ৩ জন থাকবে
অফলাইনে, বাকি ৩ জন একটিভ থাকবে। এই ৩ জনের মধ্যে লোড দিবে ১ জন, বাকি
দুইজন লোড বিহীন অবস্থায় নেটে একটিভ থাকবে। সুতরাং ১ এমবি থেকে ৬ জনকে
দিলেও ফুল স্পিডই পাবে। আপনি ১ এমবি থেকে দিচ্ছেন ৬ এমবি। সুতরাং আপনি ১২০০
টাকায় বিক্রি করছেন না বরং ১২০০X৬=৭২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
৭২০০-৩০০০=৪২০০ টাকা আপনার লাভ থাকবে। কিন্তু ৬ জনকে দেওয়ার মত অবস্থায়
যেতে হলে অন্তত
১৫০ ইউজার লাগবে। আবার ১৫০ ইউজারের জন্য যে পরিমাণ
ব্যান্ডউইথ লাগবে সেগুলি পাইকারি রেটে পাবেন। খুচরা ৩০০০ করে হলে পাইকারি
২০০০ করে পাবেন। ইউজার কম হলে একটিভ রেশিও অনেক বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে আপনি
৬ জনকে দিতে পারবেন না। দিলেও স্পিড পাবে না। তাই শুরুর দিকে১ এমবি থেকে ৩ জনকে দেওয়া
হয়। এ কারণে প্রথম দিকে তেমন লাভ হয় না।
আয়-ব্যয়:
এই ব্যবসায় আয় গ্রাহকের উপর নির্ভরশীল। যদি গ্রাহক
বেশি হয় তাহলে আয়ও বেশি হবে। আপনার এলাকায় যদি আপনিই একমাত্র ISP হয়ে
থাকেন তাইলে তো সোনায়-সোহাগা। আপনার ইচ্ছামত প্যাকেজের দাম বসিয়ে আয় করতে
পারবেন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলে প্রথমদিকে বেশি আয় করা কঠিন হয়ে পরবে।
৫০ জন ইউজার পেলে প্রতি মাসে ১২,০০০-১৫,০০০ টাকা আয় করা যাবে। এরপর ইউজার
যত বাড়বে আয়ও তত বাড়বে।
সবার বুঝার সুবিধার্থে আমি পয়েন্ট ভিত্তিক আরও কিছু তথ্য যুক্ত করলাম। আশা করি এরপর সবার কাছে বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা আসলে কি:
Broadband Internet ব্যবসা মূলত Internet Distribution ব্যবসা। অনেক ভাবেই মানুষ ইন্টারনেট
ব্যবহার করে থাকে। যেমন ওয়ারল্যাস, ওয়াইফাই, ওয়াইম্যাক্স, ব্রডব্যান্ড।
এদের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটেই সবচেয়ে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেওয়া যায়
গ্রাহকদের।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদা কেমন:
আমার মূল লেখাতেই বলেছি
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের জন্য সবাই হা হুতাশ করছে। সে থেকেই চাহিদা
সম্পর্কে আচ করা যায়। কারণ ওয়ারল্যাস ইন্টারনেট অনেক ব্যয়বহুল। এ কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা
ব্রডব্যান্ডেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বেশি। তাই এ কথা বলে দেওয়া যায় যে অনেক
ধরনের ইন্টারনেট সেবার মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদাই সবচেয়ে
বেশি।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসায় সুবিধা কি কি:
১। এই ব্যবসায় ঝুঁকি কম।
২। এই ব্যবসায় একবার সব কিছু সেট আপ করে নিলে আর তেমন খরচ লাগে না।
৩। ব্যবসা বর্ধিত হলেও মূলধন সেই অনুপাতে বাড়াতে হয় না।
৪। সঠিক জায়গা নির্বাচন করে ব্যবসা করতে পারলে দ্রুত লক্ষে পৌছা যায়।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় কি কি সমস্যায় পরতে পারেন:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় যেমন কিছু সুবিধা আছে তেমনি কিছু ঝামেলায়ও পরতে হয়। যেমন –
১। লাইন অনেক বড় হলে সেটা রক্ষণাবেক্ষণ করা কঠিন হয়ে পরে।
২। লাইনের বিভিন্ন জায়গায় কেটে যায়, সুইচ, লেন কার্ড চুরি হয়ে যায়।
৩। চোরাই লাইন সংযোগ দেয়।
৪। বর্ষাকালে বজ্রপাতে যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়।
কিভাবে শিখবেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা:
ব্রডব্যান্ড
ইন্টারনেট ব্যবসায় কিছু টেকনিক্যাল বিষয় আছে। আপনাকে অবশ্যই সেগুলি রপ্ত
করতে হবে। মাইক্রোটিক রাউটারে ইউজার কন্ট্রোল করা, সুইচ ফিট করা,
নতুন সংযোগ দেওয়া শিখতে হবে। তবে এইগুলা শিখা কোন কঠিন কাজ নয়। বই/ভিডিও
টিউটোরিয়াল দেখলেই অনায়াসেই শিখতে পারবেন। এছাড়া আমাদের কাছে শর্ট ক্লাস করেও শিখে নিতে পারেন।
ব্রডব্যান্ড ব্যবসার মার্কেটিং করবেন কিভাবে:
আপনি যে
ব্রডব্যান্ড ইন্টানেটের সার্ভিস নিয়ে এসেছেন সেটা তো মানুষকে জানাতে হবে।
আর এর জন্য আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞাপন/প্রচার করতে হবে। যেহেতু আপনি একটা
এলাকা টার্গেট করে ব্যবসায় নামবেন সেহেতু এতে মার্কেটিং করতে তেমন বড় বাজেট
রাখতে হয় না। লিফলেটে আপনার প্যাকেজ সমূহ, প্যাকেজ মূল্য, স্পিড, শর্তাদি
ইত্যাদি বিস্তারিত লিখে আপনার টার্গেটকৃত এলাকায় বিতরণ করতে হবে। আগে থেকেই
কোন আইএসপি থাকলে তাদের সাথে কম্পেয়ার করে রেট নির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়া
সরাসরি বাসায় বাসায় গিয়ে, মাইকিং করে, ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে, পরিচিত মহলকে
অনুরোধ করেও মার্কেটিং করা যায়। এই ব্যবসা যেহেতু ব্যবহারকারী ভিত্তিক এবং
এক ব্যবহারকারীর সাথে আরেক ব্যবহারকারী লাগোয়া থাকে তাই আপনার বর্তমান
ব্যবহারকারীদের বিশেষ ডিসকাউন্টের অফার দিয়ে প্রভাবিত করেও উইজার বাড়াতে
পারবেন। এ ছাড়া এমন ঘোষণা দিতে পারেন প্রথম এতজন ব্যবহারকারী এত পার্সেন্ট
ডিসকাউন্ট পাবেন। তাতে দ্রুত কাস্টমার পেতে সাহায্য করবে।
নতুনরা এই ব্যবসায় যে ভুল করতে পারে:
নতুনরা
এই ব্যবসায় এসে প্রথমেই যেই ভুলটি করতে পারে সেটা হচ্ছে সঠিক জায়গা
নির্বাচন করতে না পারা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা এমন জায়গা চয়েজ করে
বসে যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ কম্পিউটার ব্যবহারকারী নেই। এ ছাড়া ঐখানে যদি
প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে তাইলে কত টাকা বিনিয়োগ করতে হবে সে সম্পর্কে ধারনা না
রাখা। আবার অনেক সময় ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডার থেকে অনেক দূরে বিজনেসে শুরু
করে দিতে পারে। এতে বিনিয়োগ করতে হয় অনেক বেশি। সাথে সার্ভিসও তেমন ভাল হয়
না।
কর্মী লাগলে তার যোগ্যতা কেমন চাই:
যদি এই ব্যবসায়
আপনাকে কোন কর্মী নিয়োগ দিতে হয় তাইলে দেখতে হবে মাইক্রোটিক রাউটার
কন্ট্রোলিং এর কাজ জানে কিনা, নতুন পোর্ট বানানো, সুইচ, কানেকশন দিতে পারে
কিনা, যোগাযোগ দক্ষতা কেমন, মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা কেমন এসব দেখতে
হবে। এ ছাড়া যোগ্যতা হিসেবে বাই সাইকেল চালানো জানতে হবে। কেননা দূর
দূরান্তে গিয়ে লাইন ঠিক করতে হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
১। প্রথম দিকে মুনাফা করার চেয়ে ব্যবহারকারী বৃদ্ধির দিকে নজর দিন।
২। অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে তুলনামূলক কম মূল্যে সেবা দিন।
৩। সার্বক্ষণিক সাপোর্টের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪। লাইনে কোন সমস্যা হলে দ্রুত সেটা মেরামত করতে হবে।
৫। ২৪ ঘণ্টা সার্ভার আপ রাখতে হবে। তার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬। আপনার সার্ভিসে ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট হচ্ছে কিনা সেটার খোজ খবর নিতে হবে। তাতে করে আপনার গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
সফলরা কি বলে:
বছর দুই এক ধরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা করছেন এমন অনেক সাথে কথা বলে জানা যায়। তারা
জানান প্রথমে তারা বিটিসিএল বা অন্য বেসরকারি আইএসপি থেকে লাইন নিয়ে অল্প পরিসরে নিজের বাসাকেই অফিস
বানিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। তারা প্রথমেই ৫-১০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ আর ১৫-৩০ জন গ্রাহক
নিয়ে স্টার্ট করেন। প্রথম মাসে তাদের আয় হয় মাত্র ২০০০-১০০০০ টাকা। বর্তমানে তাদের অনেকেরি
মোট গ্রাহক ১৫০-২০০+। প্রতি মাসে আয় হচ্ছে ৪০০০০-৮০০০০ টাকার উপরে। তারা বলেন, এই
ব্যবসায় ধৈর্য আর লেগে থাকতে হবে। কাস্টমারদের সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়ার
জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তারা খারাপ কিছু করলেও তাদের উপর রাগ করা যাবে
না। গভীর রাতেও অনেকে ফোন করতে পারে। তাতে বিরক্ত হওয়া চলবে না। যারা এসব
করতে না পারবে তাদের উচিত অযথা ব্যবসা করতে এসে মার্কেট নষ্ট না করা।
এখন আপনাদের যদি আরও কিছু জানার থাকে তাহলে আমার সাথে ফোনে/
ফেসবুকে যোগাযোগ করুন।
Contact us:
Name- Tanvir Ahmed
Email-info@trstnetwork.com